জীববিজ্ঞান ২য় পত্রের সৃজনশীল প্রশ্নের নমুনা উত্তর

You are currently viewing জীববিজ্ঞান ২য় পত্রের সৃজনশীল প্রশ্নের নমুনা উত্তর

জীববিজ্ঞান বইতে স্বাদু পানির এমন একটি প্রাণীর বর্ণনা আছে যার বহিঃত্বকে প্রতিরক্ষা ও শিকার ধরার কাজে ব্যবহার্য এক জাতীয় কোষ থাকে।

(ক) মেসোগ্লিয়া কি?

(খ) শ্রমবণ্টন বলতে কি বুঝায়?

(গ) উদ্দীপকে বর্ণিত কোষটি কিভাবে শিকার ধরার কাজে ব্যবহৃত হয় উল্লেখ কর ।

(ঘ) যৌন জনন ছাড়াও প্রাণীটি প্রজনন কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম- ব্যাখ্যা কর।

১ নং প্রশ্নের উত্তর (ক)

মেসোগ্লিয়া: Hydra-র দেহপ্রাচীরের এপিডার্মিস ও গ্যাস্ট্রোডার্মিসের মাঝে স্যান্ডউইচের মতো অবস্থিত প্রায় 0.1 মাইক্রোমিটার পুরুত্ব বিশিষ্ট, স্বচ্ছ, স্থিতিস্থাপক ও জেলির ন্যায় আঠালো পদার্থকে মেসোগ্লিয়া(mesoglea) বা মেসোল্যামিলা বলে । [জ্ঞানমূলক- ধারণা/তথ্য স্মরণ করতে]

১ নং প্রশ্নের উত্তর (খ)

বহুকোষী জীবদেহের শারীরবৃত্তীয় বিভিন্ন কার্যাবলি যখন দেহের বিভিন্ন কোষ, কলা বা তন্ত্রের মধ্যে সুষমভাবে বন্টিত হয় তখন তাকে শ্রমবণ্টন বলে । [জ্ঞানমূলক- ধারণা/তথ্য স্মরণ করতে]

Hydra বহুকোষী প্রাণী হলেও এদের দেহে কোন অঙ্গ বা তন্ত্রের বিকাশ হয়নি। কিন্তু এর বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় ও যান্ত্রিক কার্য সম্পাদনের জন্য দেহে সুস্পষ্ট শ্রমবণ্টন পরিলক্ষিত হয়। প্রাণিজগতের মধ্যে Hydra তথা Cnidarian প্রাণীতেই সর্বপ্রথম শ্রমবণ্টন দেখা যায়। [অনুধাবনমূলক- ধারণা/তথ্য ব্যাখ্যা করতে]

১ নং প্রশ্নের উত্তর (গ)

উদ্দীপক বর্ণিত কোষটি হলো Hydra-র দেহপ্রাচীরের নিডোব্লাস্ট কোষ । [জ্ঞানমূলক- ধারণা/তথ্য স্মরণ করতে]

Hydra-র পাদচাকতি ব্যতীত দেহের সর্বত্র এসব কোষ বিদ্যমান থাকে। তবে কর্ষিকাতে এদের সংখ্যা অধিক। নিডোব্লাস্ট কোষ সাধারণত এককভাবে অবস্থান করে। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে এরা গুচ্ছাকারে অবস্থান করে। এদের গুচ্ছকে ব্যাটারি বলে। [অনুধাবনমূলক- ধারণা/তথ্য ব্যাখ্যা করতে]

এগুলো Hydra-র শিকার অসাড় করা ও ধরার কাজে ব্যবহৃত হয়। নিডোব্লাস্ট কোষ থেকে নেমাটোসিস্ট নিক্ষিপ্ত হওয়ার জন্য রাসায়নিক ও যান্ত্রিক উভয় ধরনের ফ্যাক্টরই জড়িত। তবে এর প্রকৃত কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। ধারণা করা হয় কোন শিকার Hydra-র কর্ষিকার নিকটবর্তী হলে শিকার দেহের রাসায়নিক পদার্থের প্রভাবে নেমাটোসিস্ট প্রাচীরের পানি ভেদ্যতা ক্ষমতা বেড়ে যায়। এতে থলির ভিতর দ্রুত পানি প্রবেশ করায় ভিতরের অভিস্রবণিক চাপ বেড়ে যায়। এসময় শিকার নিডোব্লাস্টের নিডোসিল স্পর্শ করা মাত্র উহার অপারকুলাম খুলে যায় এবং সূত্রকসহ নেমাটোসিস্ট বাহিরে নিক্ষিপ্ত হয়। [প্রয়োগমূলক- স্মরণকৃত ধারণা/তথ্য অনুধাবন করে তা নতুন পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করতে]

১ নং প্রশ্নের উত্তর (ঘ)

যে প্রক্রিয়ায় জীব নিজ বংশ রক্ষার জন্য প্রজননক্ষম অনুরূপ জীব সৃষ্টি করে তাকে প্রজনন বলে। [জ্ঞানমূলক- ধারণা/তথ্য স্মরণ করতে]

প্রজনন প্রতিটি জীবের স্বাভাবিক জৈবিক প্রক্রিয়া। Hydra অযৌন ও যৌন উভয় পদ্ধতিতে প্রজনন সম্পন্ন করে । [অনুধাবনমূলক- ধারণা/তথ্য ব্যাখ্যা করতে]

অধিকাংশ Hydra একলিঙ্গ প্রাণী। তবে কিছু প্রজাতির Hydra উভলিঙ্গ। যৌন জননের ক্ষেত্রে শরৎকালের শেষে ভিন্ন ভিন্ন প্রাণীর দেহে অস্থায়ীভাবে শুক্রাশয় ও ডিম্বাশয় সৃষ্টি হয়। উভলিঙ্গের ক্ষেত্রে ভিন্ন সময় শুক্রাণু ও ডিম্বাণু সৃষ্টি হয় বলে স্ব-নিষেক ঘটে না । Hydra-র যৌন প্রজনন তিনটি প্রধান ধাপে সংঘটিত হয়। ধাপগুলো হলো-১। জননকোষ সৃষ্টি, ২। নিষেক ও ৩। পরিস্ফুটন। তবে যৌন জনন ছাড়াও হাইড্রা অযৌন প্রক্রিয়ায় প্রজনন করে। [প্রয়োগমূলক- স্মরণকৃত ধারণা/তথ্য অনুধাবন করে তা নতুন পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করতে]

Hydra-র অযৌন প্রজনন প্রধানত দুভাবে সংঘটিত হয়, যথা— (১) মুকুলোদগম এবং (২) বিভাজন

১। মুকুলোদগম: এটি Hydra-র একটি সাধারণ প্রজনন পদ্ধতি। খাদ্যের প্রাচুর্যতার কারণে গ্রীষ্মকালে Hydra দেহে মুকুলোদগম ঘটায়। প্রক্রিয়ার শুরুতে দেহের মধ্যাংশ বা নিম্নাংশের কোন স্থানের এপিডার্মাল ইন্টারস্টিশিয়াল কোষ দ্রুত বিভাজিত হয়ে একটি ক্ষুদ্র স্ফীত অংশের সৃষ্টি করে।

হাইড্রার মুকুলোদগম

এটি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়ে ফাঁপা, নলাকার মুকুল বা কুঁড়িতে পরিণত হয়। মুকুলটি মাতৃপ্রাণী হতে পুষ্টি গ্রহণ করে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং শীর্ষপ্রান্তে মুখছিদ্র, হাইপোস্টোম ও কর্ষিকা গঠন করে। এসময় মাতৃপ্রাণী ও মুকুলের সংযোগস্থলে একটি বৃত্তাকার খাঁজের সৃষ্টি হয়; এ খাঁজটি ক্রমে গভীর হয়ে মুকুল তথা অপত্য হাইড্রাকে মাতৃপ্রাণী হতে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে ।

একই সময়ে একটি হাইড্রার দেহে একাধিক মুকুল সৃষ্টি হতে পারে। একটি মুকুলোদগম সম্পন্ন হতে সময় লাগে 2-3 দিন ।

২। বিভাজন: এটি Hydra-র একটি অস্বাভাবিক প্রজনন। এতে একটি Hydra লম্বালম্বি বা আড়াআড়িভাবে দ্বি-বিভাজিত হয়ে দুটি Hydra তে পরিণত হয়। এক্ষেত্রে ইন্টারস্টিশিয়াল কোষ বিশেষ ভূমিকা রাখে । [স্মরণকৃত ধারণা/তথ্য অনুধাবন করে তা নতুন পরিস্থিতিতে প্রয়োগের মাধ্যমে তা বিশ্লেষণ/মূল্যায়ন করতে]

পিডিএফ আকারে ফাইলটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক কর

উৎস: জীববিজ্ঞান ২য় পত্র- ড. মোঃ আবদুল আলীম

Leave a Reply