কদম রসুল বলতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর পায়ের ছাপ কে বোঝায়। কথিত আছে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মেরাজের রাত্রে বোরাকে উঠবার সময় বেশকিছু পাথরে উনার পায়ের ছাপ পরে। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত পাথরটি রয়েছে জেরুজালেমে। এরকম আরও কিছু পাথর রয়েছে ইস্তাম্বুল, কায়রো এবং দামেস্কে। আমাদের বাংলাদেশেও এমন দুটি পাথর রয়েছে, যার একটি আছে চট্টগ্রামে আর অপরটি রয়েছে নবীগঞ্জ কদম রসুল দরগায়।

মির্জা নাথান কর্তৃক ১৭ শতকে রচিত ঐতিহাসিক গ্রন্থ “বাহারিস্থান-ই-গায়েবী”-তে উল্লেখ রয়েছে, ১৫৮০ সালে আফগান সেনাপ্রধান মাসুম খান কাবুলি তার বন্ধু ঈশা খাঁ’র পরামর্শে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর পদচিহ্ন খচিত এ পাথরটি একজন আরব বণিকের কাছ থেকে কিনে নেন এবং নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জে এটি প্রতিষ্ঠা করেন।
সুবাদার ইসলাম খান, মুঘল সম্রাট শাহজাহান সহ আরো অনেকে এ দরগাহ দর্শন করেন। সম্রাট শাহজাহান এই কদম রসুল দরগাহ দর্শন করে রসুল (সা:) এর পদচিহ্ন রক্ষনাবেক্ষণের জন্য দরগাহর খাদেম সৈয়দ হাজী নূর মোহাম্মদ কে ৮০ বিঘা করমুক্ত জমি দানের ওয়াদা করেন। পরে শাহজাহান পুত্র শাহসুজা বাংলার সুবেদার পদে নিযুক্ত হলে দরগার জন্য উক্ত ৮০ বিঘা জমি দান করেন। ঈশা খাঁর প্রপৌত্র দেওয়ান মনোয়ার খাঁ এখানে একটি ইমারত তৈরি করে দেন। একসময় সেই ইমারতটিও কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৭৭৭-৭৮ সালের দিকে ঢাকার জমিদার গোলাম নবী এক গম্বুজ বিশিষ্ট দরগা নির্মাণ করে পাথর খন্ডটি স্থাপন করেন। পশ্চিম দিকের দোতলা তোরণটি (১৮১৪ খ্রি.) নির্মাণ করেন গোলাম নবীর তৃতীয় পুত্র গোলাম মোহাম্মদ।
#Narayanganj